আজ || রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম :
 


রায় সাহেবের বিনোদ গঞ্জ

এম.এ.সবুর

ইউএলও, কপিলমুনি ইউনিয়ন ভূমি অফিস : :

 

সুন্দরবনের শিবসার তটে, পাইকগাছার সন্নিকটে

খুলনা জেলার শ্রেষ্ঠ খ্যাত, দানবীরের জম্ম ঘটে।

কপোতাক্ষ নদের পূর্ব তীরে, কপিলমুনি বাজারে

সাধু পরিবারে জম্ম তার,শুভ শুক্লাষ্টমী তিথিতে।

 

১৮৯০ সালে ১০মে তারিখে, পৃথিবীর বুকে আসে

মহিষী সাধুকে মানব সেবায়, জুড়ায় শিশু কালে।

যাদব সাধুর যোগ্য সন্তান, বিনোদ বিহারী নামে

মাতার স্মৃতিতে সহচরী দেবী,স্কুল প্রতিষ্ঠিত করে।

 

এই স্কুলের ছাত্র ছাত্রী, ডাক্তার ইন্জিনিয়ার হয়ে

দেশের সেবায় জীবন সংগ্রাম ,স্মরণীয় সব রবে।

বেদ মন্দির কালি মন্দির, উম্মুক্ত জায়গায় নির্মাণে

নন্দিত নক্সায় মন্দির করে, মার্বেল পাথর বসায়ে।

 

পূজা পার্বণ মেলা অনুষ্ঠান, বিনোদ সাধু’র সময়ে

পূজার আনন্দ প্রসাদ ভোজ,স্মরণীয় সব রয়েছে।

বিনোদ ভবন কালের স্বাক্ষী, শতাব্দীর স্মৃতি ভাসে

অক্ষয় নিবাস রহে আজি,এই বিনোদগঞ্জের মাঝে।

 

মাদ্রাসা মসজিদ বাজার সংলগ্ন,অতি উত্তম রহে

হিন্দু মুসলিম বিনোদ গঞ্জে,ব্যবসা বাণিজ্য করে।

প্রখর মেধা বিনোদ বিহারীর, বাজার বণ্টন করে

কাপড় লোহা সুতা পটি, মাছ মাংস পৃথক বসে।

 

পাইকারি হাট তোহা বাজার, পান সুপারি পাশে

ধানের হাট ধান্য চাতালে,চালের দোকান সাথে।

ঔষধ মুদি ফলের দোকান, হোটেল আছে হাটে

চা স্টল মিষ্টির দোকান, হাট বাজারের মোড়ে।

 

ছোট বড় পাকা রাস্তা, বাজারের গলিতে আছে

মনের আনন্দে কেনা বেচা, দিনে কিংবা রাতে।

গুণী সন্ন্যাসীর মিলন সমাবেশ, শান্তি মঙ্গল লয়ে

রায় সাহেব ১৩৩৯ সনে,বিনোদ গঞ্জ প্রতিষ্ঠা করে।

 

সোনার দেশে স্বপ্ন জাগ্রত, এই স্বাধীন বাংলাদেশে

বিনোদ সুনামে কপিলমুনি হাট, বিনোদ গঞ্জ হয়ে।

জামানাত ছাড়া ঋণ প্রণেতা, বিনোদ বিহারী সাধু

তদ্বীয় ঋণে ব্যবসায়ী সমাজ পেয়েছে চমক যাদু।

 

দেশ বিদেশে পরিচিতি ঘটে, ব্যবসা বানিজ্যের তরে

বিনোদগঞ্জই শ্রেষ্ঠ মোকাম, কপিলমুনি গ্রামের বুকে।

দূর এলাকার ক্রেতা বিক্রেতা, বিনোদগঞ্জের হাটে

পছন্দের জিনিষ সওদা করে, নগদ আর বিকাশে।

 

সুন্দর পরিবেশে হাট বসে, সুনাম ছড়ায় দেশান্তরে

শ্রেষ্ঠ খ্যাত ভরত হাসপাতালে, রোগীর সেবা চলে।

দক্ষ চেতনা সূক্ষ্ম কল্পনা, বাজারের উন্নয়ন করে

একক চেষ্টায় শুভ ভাবনায়,সুনাম সুখ্যাতি বাড়ে।

 

মনুষ্য সেবায় দানবীর সাধুর, সফল অবদান দেখে

রায় সাহেব উপাধি সাধুকে,সরকার ভূষিত করে।

মানব সেবায় বলি হয়ে, বিলায়ে নিজের সম্পদ

মরণের পরেও অমর রহে, হয়নি অর্থের অভাব।

 

রায় সাহেবের সব সম্পত্তি, লেখা খোদাই করে

রাষ্ট্রীয় কাজে খরচ হবে, বংশধরের প্রাপ্য নহে।

রায় সাহেবের প্রতিকৃতিতে, সম্মান প্রদানকালে

স্মরণীয় সাধুর বাস্তব ছবি, মনের পাতায় ভাসে।

 

কপিলমুনি গ্রামের উদীয় সূর্য, দান জগতের নক্ষত্র

রায় সাহেবের সুনাম সুখ্যাতি, ছড়ায়ে রয়েছে সর্বত্র।

দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত সাধু, কলিকাতাতে থাকে

দেশ প্রেমিক রায় সাহেবের, জম্মভুমির স্মৃতি ভাসে।

 

জন্ম জয়ন্তীতে জনতার পণ, বজ্র আওয়াজে হবে

রায় সাহেবের স্মরণীয় পথে, মোদের চলতে হবে।

রায় সাহেবের যোগ্য পৌত্র, গৌতম কুমার সাধুকে

১৩৩তম জম্ম জয়ন্তীতে, গোলাপ শুভেচ্ছা তাকে।

 

হৃদয়ে স্মরণীয় রায় সাহেব, জীবন প্রদীপ নিভিয়ে

শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে, ৩ রা মাঘ ১৩৪১ সালে।

এই দিবসে প্রার্থনা মোদের, মহান স্রষ্টার কাছে্

স্রষ্টা যেন রায় সাহেবকে রাখে স্বর্গীয় সুখে।


Top